Thursday, April 30, 2020

6th Sem Honours Topic (Proofs for Gods existence)

ঈশ্বরের অস্তিত্বের প্রমাণ (Proofs for Gods existence):

    রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর সর্বোচ্চ সত্তার অস্তিত্বের প্রমাণ দাখিল করার তাগিদ অনুভব করেননি। কারণ ঈশ্বরকে খুব বেশি বৌদ্ধিক এবং বিমুর্ত যুক্তিজালে তিনি বাঁধতে চাননি। তাঁর কাছে ঈশ্বর ছিল অস্তিত্বের পূর্ব শর্ত------তাই তার প্রমাণ অপ্রয়োজনীয়।সর্বোচ্চ সত্তার অস্তিত্ব নিজের ভেতর থেকে উপলব্ধির বিষয়--যৌক্তিক ব্যাখ্যার বিষয় নয়।বৌদ্ধিক যুক্তি দ্বারা ঐশ্বরিক একত্বকে অনুধাবন করা সম্ভব নয় বলেই তিনি বিশ্বাস করতেন।
    কিন্তু কবিগুরু এ বিষয়ে সচেতন ছিলেন যে, সাধারণ কথাবার্তায়,দৈনন্দিন জীবনে, বৌদ্ধিক প্রমাণ এবং যৌক্তিক ব্যাখ্যা একটা ভূমিকা পালন করে।যাদের মধ্যে ঈশ্বরের ব্যক্তিগত উপলব্ধি নেই,যুক্তি-প্রমাণ সকল তাদের মধ্যে ঈশ্বরের প্রতি বিশ্বাসের ক্ষেত্রে এক জাতীয় শক্তি যোগায়। এটা বুঝেই তিনি ঈশ্বরের অস্তিত্বের স্বপক্ষে যুক্তি দিয়েছেন যাকে 'প্রমাণ' বলা যায়।এই প্রমাণগুলোর কিছু কিছু দর্শনের প্রথাসিদ্ধ প্রমাণের অনুরূপ,আর কিছু কিছু তার নিজের অন্তদর্শন লব্ধ।
    তাঁর অন্যতম প্রিয় ঈশ্বর বিষয়ক প্রমাণ হল,দর্শনের প্রথাসিদ্ধ ভাষায় যাকে বলা হয় উদ্দেশ্য মূলক যুক্তি বা পরিকল্পনা ভিত্তিক যুক্তি।কবি নিজে ছিলেন শৃঙ্খলা এবং সুন্দরের প্রেমিক।স্বাভাবিকভাবেই তাঁর যুক্তির সাক্ষ্যপ্রমাণ এসেছে জগতের শৃঙ্খলা কিভাবে প্রকাশিত হচ্ছে তার উদাহরণ দিয়ে।তিনি 'সৃষ্টির ঐক্য' প্রসঙ্গে লিখেছেন: আমরা অনুভব করি এই জগত এক সৃষ্টি,এর কেন্দ্রে আছে এক জীবন্ত আদর্শ,যা নিজেকে প্রকাশ করছে এক চিরন্তন ঐক্যতানকে, যা  সৃষ্টি হচ্ছে অসংখ্য বাদ্যযন্ত্রের সহযোগিতায়,প্রত্যেকেই যথাযথ সুরে যাকে বাজাচ্ছে। কবি বিশ্বাস করতেন বিশ্বব্রহ্মাণ্ডের এক সৃষ্টিকর্তাকে-যে সমগ্র জগতে এক নিয়ম শৃঙ্খলার সৃষ্টি করতে সক্ষম হয়েছে।এই বিশ্বজগত কবির কাছে প্রকাশিত হয়েছে 'ঐক্যতান' রূপে।যেখানে সংগীতের সমস্ত মুচ্ছনা প্রকাশ পেয়েছে এক শৃঙ্খলিত আকারে,আর এক অসীম 'সংগীত-সৃষ্টিকারী' ছাড়া এই ঐক্যতানকে ব্যাখ্যা করা যায়না।দর্শনের ছাত্র  একেই উদ্দেশ্যমূলক যুক্তির একটি বিশেষ আকার রূপে চিহ্নিত করতে পারেন।
    একই যুক্তি তিনি অন্যত্র অন্যভাবে উল্লেখ করেছেন।কবি অনুভব করেছেন,এই জগৎ-এ সমগ্রতা ও ঐক্যতা প্রকাশিত হয় পরিণামে। যদিও আপাত বিরোধিতা দেখা যায় বাস্তব ঘটনা সমূহের মধ্যে।যদি আমরা বাহ্যিক বিরুদ্ধ বিষয়গুলিকে বিশ্লেষণ করি,আমরা দেখতে পাবো তাদের মধ্যে এক ধরনের ঐক্য আছে। কবির কাছে এটি খুব উল্লেখযোগ্য বিষয় হিসাবে প্রতিভাত হয়েছে।যেমন,নদীর দুই কুল বাহ্যিকভাবে নদী সীমা নির্ধারণ করে।এই অর্থে নদীর দুই ধারের বৃদ্ধিতে সীমাবদ্ধতা আরোপ করে নদীর দুই কুল। কিন্তু একটু চিন্তা করলেই বোঝা যায় একটি নদী---নদী ওঠে তার দুই-তীরের জন্যই।নদীর দুই তীরই তাকে বাধ্য করে সামনে এগিয়ে যেতে এবং এভাবেই নদী বেঁচে থাকে।'সাধনা' গ্রন্থে  তিনি এরকম অনুভূতির কথাই বলেছেন।
    তাঁর মতে,ভুল দৃষ্টিকোণ থেকে দেখার ফলে আমরা জগতের এক বিকৃত ছবি পাই,আর  একথা অনুভব করতে পারিনা যে বিশ্বব্যাপী এমন এক সত্তা আছে,যে সমগ্র বিশ্ব ব্রহ্মাণ্ডের সবকিছু নিয়ন্ত্রণ করছে।প্রায় দার্শনিক স্পিনোজার মতো তিনিও বলেছেন সত্য কখনো সাধারন চৈতন্য দ্বারা প্রকাশিত হয় না;এমনকি অংশের চেতনা দ্বারাও সত্য অপ্রকাশিত থেকে যায়।সত্য কেবল প্রকাশিত হয় সমগ্র চেতনা দ্বারা।বেহালার সমস্ত তার থেকে সুন্দর শব্দতরঙ্গকেই বাজানো যায়----কিন্তু একটি তার থেকে বেশুরো আওয়াজই বাজে।সকলেই তারগুলো নাড়াচাড়া করে কিছু শব্দ উৎপাদন করতে পারে।কিন্তু কেবল কয়েকজন প্রতিভাবানরাই পারে সত্যিকারের বেহালাবাদক হতে। সুতরাং এর থেকে তো বলা যাবেনা যে বেহালা তৈরি হয়েছে বিকৃত সুর উৎপাদনের জন্য? কবির এই উপমা বিশ্লেষণ করলেই বোঝা যায় তিনি সর্বোচ্চ সত্তার সৃষ্ট ঐক্যকে বুঝতে না পারার জন্য দায়ী করেছেন আমাদের আংশিক দৃষ্টিভঙ্গিকেই।
    রবীন্দ্র-দর্শনে ঈশ্বরের অস্তিত্ব প্রমাণে আর এক ভিন্নশ্রেণীর সাক্ষ্য-প্রমাণ পাওয়া যায়,যেখানে বলা হচ্ছে সৃষ্টির সমস্ত প্রক্রিয়ার মধ্যেই আনন্দ আছে।প্রত্যেক ব্যক্তির মধ্যে এই আনন্দ অনুভবের ক্ষমতা আছে।যদি নেপথ্যে একজন সৃষ্টিকর্তাকে বিশ্বাস না করা যায় তবে জীবন্ত আনন্দ তত্ত্বের ব্যাখ্যা করা যাবে কিভাবে? এই আনন্দকে অন্য ভাবে ব্যাখ্যা করা যেত,যদি তা কেবল সুখ হতো, যা বিশেষ ব্যক্তিকে বিশেষ সময়ে সন্তুষ্টি দেয়।কিন্তু এই আনন্দ তো সুখ নয়।  এই আনন্দ এক বিশ্বব্যাপী বিষয়---যা প্রকাশকে অতিক্রম করে যায়।'বিশুদ্ধ আনন্দ', রবীন্দ্রনাথের মতে, স্বর্গীয় সুষমামণ্ডিত।
                                    ----------


Wednesday, April 29, 2020

6th Sem Honours Nature of Religion by Rabindranath Tagore

Rabindranath Tagore
Nature of Religion (ধর্মের প্রকৃতি):


    শিশুকাল থেকে ব্রাহ্মসমাজের আবহাওয়ায় রবীন্দ্রনাথ বিকশিত হয়েছেন।তাই তার ধর্ম সম্পর্কিত চেতনায় ব্রাহ্মসমাজের প্রভাবে ছিলই,পরবর্তীকালে হিন্দুত্বের কিছু বিষয়ও যুক্ত হয়েছিল। পরিণত বয়সে তাঁর ধর্ম সম্পর্কিত চেতনা আরো বিস্তার লাভ করে এবং তিনি জীবনের শেষ দিন পর্যন্ত বিশ্বাস করতেন 'মানবিক ধর্মে' যা 'মানুষের ধর্ম' নামক গ্রন্থে তিনি বিস্তারিত ব্যাখ্যা করেছেন। তিনি বিশ্বাস করতেন,ধর্ম  কখনো গোষ্ঠী, সম্প্রদায়, উপজাতি, জাতি রাষ্ট্রের মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকতে পারে না। মানুষ ধর্মের বিশেষ একটি আকৃতি গ্রহণ করতে পারে নিজের প্রয়োজন ও সুবিধামতো কিন্তু পরিণামে প্রকৃত ধর্ম সমস্ত বিশেষ আকৃতিকে অতিক্রম করে যায়।
    যে দার্শনিক দর্শনকে সহজ করিয়া দেখাইতে পারেন তিনি যথার্থ ক্ষমতাশালী, ধীশক্তিমান যে সভ্যতা আপনার সমস্ত ব্যবস্থাকে সরলতার দ্বারা সুশৃঙ্খল ও সর্বত্র  সুগম করিয়া আনিতে পারে সেই সভ্যতাই যথার্থ উন্নততর।বাহিরে দেখিতে যেমনই হোক, জটিলতাই দুর্বলতা, তাহা অকৃতার্থতা, পূর্ণতাই সরলতা। ধর্ম সেই পরিপূর্ণতার,সুতরাং সরলতার,একমাত্র চরমতম আদর্শ।
    কিন্তু এমনি আমাদের দুর্ভাগ্য সেই ধর্মকেই মানুষ সংসারের সর্বাপেক্ষা জটিলতা দ্বারা আকীর্ণ করিয়া তুলিয়াছে।তাহা অশেষ তন্ত্রে-মন্ত্রে,কৃত্রিম ক্রিয়াকর্মে, জটিল মতবাদে,বিচিত্র কল্পনায় এমনি গহন দুর্গম হইয়া উঠিয়াছে যে,মানুষের সেই স্বকৃত অন্ধকারময় জটিলতার মধ্যে প্রত্যহ এক একজন অধ্যাবসায়ী এক এক  নতূন পথ কাটিয়া নব নব সম্প্রদায়ের সৃষ্টি করিতেছে।সেই ভিন্ন ভিন্ন সম্প্রদায় ও মতবাদের সংঘর্ষে জগতে  বিরোধ-বিদ্বেষ অশান্তি অমঙ্গলের আর সীমা নাই।
    এমন হইল কেন? ইহার একমাত্র কারণ, সর্বান্তঃকরণে আমরা নিজেকে ধর্মের অনুগত না করিয়া,ধর্মকে নিজের অনুরূপ করিবার চেষ্টা করিয়াছি বলিয়া।ধর্মকে আমরা সংসারের অন্যান্য আবশ্যকদ্রব্যের ন্যায় নিজেদের বিশেষ ব্যবহারযোগ্য করিয়া লইবার জন্য আপন আপন পরিমাপে তাহাকে বিশেষভাবে খর্ব করিয়া লই বলিয়া।
  ধর্ম আমাদের পক্ষে সর্বশ্রেষ্ঠ আবশ্যক সন্দেহ নাই, কিন্তু সেই জন্যই তাহাকে নিজের উপযোগী করিয়া লইতে গেলেই তাহার সর্বশ্রেষ্ঠ আবশ্যকতাই নষ্ট হইয়া যায়।তাহা দেশকালপাত্রের ক্ষুদ্র প্রভেদের অতীত, তাহা নিরঞ্জন বিকারবিহীন বলিয়াই তাহা আমাদের চিরদিনের পক্ষে আমাদের সমস্ত অবস্থার পক্ষে এত একান্ত আবশ্যক। তাহা আমাদের অতীত বলিয়াই তাহা আমাদিগকে নিত্যকাল সমস্ত পরিবর্তনের মধ্যে ধ্রুব অবলম্বন দান করে।
    রবীন্দ্র-দর্শনে ধর্ম ও দর্শনকে পৃথক করার সমস্যা বিশেষ।দুই-এরই লক্ষ এক।দর্শন হলো 'সত্যের দৃষ্টি' আর ধর্মের লক্ষ্য হল মানব মনে ঐশ্বরিকতার সঙ্গে একত্বের উপলব্ধি।উভয়েই এক এবং অভিন্ন বিষয়কে নির্দেশ করছে।তবে এই 'নিজের সত্যপ্রকৃতির উপলব্ধি' ঐশ্বরিকতার সঙ্গে 'আত্মার একত্ব'  ইত্যাদি বিষয়গুলি বিমুর্ত। অবান্তর বচনের অপব্যাখ্যা যাতে না হয় তার জন্য তিনি নির্দেশ করেছেন ধর্মে 'ভালোবাসা'র কথা।অসীমের উপলব্ধি হঠাৎ করে হওয়া সম্ভব নয়।আমাদের শুরু করতে হবে ভালোবাসা দিয়ে।আমাদের জীবন সম্পর্কে ক্ষুদ্র দৃষ্টিভঙ্গির, আত্মকেন্দ্রিক দৃষ্টিভঙ্গির পরিবর্তন ঘটাতে পারে অপরের প্রতি ভালোবাসা। বিশ্ব প্রকৃতির সকল প্রাণী, লতা, বৃক্ষ নদী, প্রান্তরের প্রতি মমত্ববোধ।এই মমত্ববোধই তার মধ্যে জন্ম দেবে এক বিশ্বব্যাপী একত্বের, এক বিশ্বজনীন ধর্মের।
    ভালোবাসা,ত্যাগ,আন্তরিকতা এবং সরলতা এই দিয়ে তৈরি হয় প্রকৃত ধার্মিকের জীবন।রবীন্দ্রনাথ 'নিষ্পাপ ভালোবাসা'র শক্তিতে এতটাই বিশ্বাস করতেন যে তিনি বলেছেন,সাংগঠনিক ধর্মের প্রয়োজনীয় জ্ঞান-----ধর্মকেই ধ্বংস করে দেয়। উপমা দিয়ে তিনি বলেছেন,পবিত্র মন্দির থেকে শিশুরা ছুটে পালিয়ে গিয়ে ধুলায় বসে খেলছে, ঈশ্বর ঐ শিশুদের খেলা লক্ষ্য করছেন-----পুরোহিতদের ভুলে গিয়েছেন।
                                   ----------


Tuesday, April 28, 2020

Political Science-- Programme ourse-- G II/ 6th Sem


Gandhi's conomic Ideas in reference to Trusteeship


Qus. Discuss Gandhi’s economic ideas with reference to his concept of trusteeship.
                বিংশ শতাব্দীর ভারতীয় রাজনৈতিক চিন্তাক্ষেত্রের সম্ভবত সর্বশ্রেষ্ঠ ব্যক্তিত্ব মহাত্মা গান্ধী আদর্শ ভারতীয় সমাজ গঠনের লক্ষ্যে রাজনৈতিক বিষয়সূচীর পাশাপাশি অর্থনৈতিক পরিবর্তনের ওপরও বিশেষ গুরুত্ব আরোপ করেছিলেন। গান্ধীর অর্থনৈতিক ধ্যান-ধারণা তাঁর রাজনৈতিক দর্শনের অন্যতম ভিত্তি। সত্য ও অহিংসার ধারণা থেকে অবিচ্ছেদ্য হলেও গান্ধী তাঁর অর্থনৈতিক ধারণা কখনোই সুসংহতভাবে গড়ে তোলেন নি। অহিংসা ও ন্যায় বিচারের ভিত্তিতে একটি আদর্শ সমাজ নির্মাণের ভিত্তি রূপেই তিনি অর্থনৈতিক ধ্যান-ধারণা গড়ে তুলেছিলেন। তাঁর অর্থনৈতিক চিন্তাধারার অপর একটি লক্ষ্য ছিল গ্রামীণ দারিদ্র দূরীকরণের মাধ্যমে সকলের উন্নতি বিধান ও সামগ্রিক গ্রামীণ সমাজের পুনর্গঠন করা।
     গান্ধীর মতানুসারে যে কোন অর্থনৈতিক কার্যাবলী কোন বিচ্ছিন্ন আভরণ না হওয়ার কারণে এর প্রধান লক্ষ্য হয়ে দাঁড়ায় এক নৈতিক ব্যবস্থাকে প্রতিষ্ঠিত করা। এই বিশ্বাস থেকেই তিনি মন্তব্য করেছিলেন “That economy is untrue which disregards moral values”। এই কারণেই নৈতিকতার দৃষ্টিকোণ থেকে গান্ধী নিজের অর্থনৈতিক ধারণা গড়ে তোলার প্রয়াস করেছেন।
পাশ্চাত্য অর্থনৈতিক ব্যবস্থা সম্পর্কে গান্ধীর ধারণা
     একটি নৈতিক সমাজ ব্যবস্থা গড়ে তোলার লক্ষ্যে গান্ধী পাশ্চাত্য ধ্যান-ধারণা থেকে গড়ে ওঠা অর্থনৈতিক বৃদ্ধি, শিল্পায়ন এবং বস্তুগত উন্নয়নের ধারণাগুলিকে অস্বীকার করে বলেন এগুলি কখনোই মানবিক উন্নয়নের মাপকাঠি হতে পারে না। তাঁর দৃষ্টিতে উন্নয়নের ধারণাটি সর্বদাই আধ্যাত্মিক বা মানসিক আত্মোপলব্ধির সাথে সংযুক্ত এবং এই ধারণা দ্বারা পরিচালিত হয়ে তিনি বলেন পাশ্চাত্য বস্তুবাদী সভ্যতা কার্যত ব্যক্তির নৈতিক উন্নয়নকে অস্বীকার করেছে। সুতরাং, এদিক থেকে বলা যেতে পারে, গান্ধীর অর্থনৈতিক দর্শন পাশ্চাত্যের মূল্যবোধ এবং পৌর সমাজের বিরোধিতার মধ্যে দিয়ে জন্মলাভ করেছে।
     পাশ্চাত্য সমাজব্যবস্থার প্রতি নিজের দৃষ্টিভঙ্গি ব্যাখ্যা করতে গিয়ে তিনি বলেন আধুনিক পাশ্চাত্য সভ্যতা বস্তুগত উৎকর্ষতার উপর অত্যধিক গুরুত্ব আরোপ করে এবং এই কারণে এর প্রধান ভিত্তি হল বস্তুগত লোভ ও শোষণ। একইসাথে তিনি বলেন এই পাশ্চাত্য শিল্পভিত্তিক সভ্যতা ব্যক্তিকে অর্থ ও যন্ত্রের ক্রীতদাসে পরিণত করে। এই বিষয়টিকে আরও সুস্পষ্টভাবে ব্যাখ্যা করতে গিয়ে তিনি বলেন কোন সভ্যতাকে তার অর্জিত বস্তুগত উন্নতি দ্বারা বিচার করার পরিবর্তে এটি কতখানি নৈতিক উৎকর্ষতা অর্জন করতে পেরেছে তার ভিত্তিতে বিচার করা উচিৎ।
পাশ্চাত্য উৎপাদন ব্যবস্থা ও গান্ধী
     পাশ্চাত্য যন্ত্রসভ্যতার সমালোচনার পাশাপাশি গান্ধী পাশ্চাত্য উৎপাদন ব্যবস্থার ভিত্তিগত কাঠামোর তীব্র সমালোচনা করেছেন। গান্ধীর মতে পাশ্চাত্য সভ্যতার উৎপাদনের দুটি ভিত্তি হল শিল্পায়ন ও ভারী যন্ত্রের ব্যাপক ব্যবহার। তাঁর মতে শিল্পায়ন সম্পদের কেন্দ্রীকরণ এবং শোষণ প্রক্রিয়াকে প্রতিষ্ঠিত করে। অনুরূপভাবে, ভারী বা বৃহৎ যন্ত্রের ব্যবহার ব্যক্তিসত্তা এবং আত্মনির্ভরশীলতার ধারণা দুটিকে বিনষ্ট করে ব্যক্তিকে পরনির্ভরশীল বা ক্রীতদাসে পরিণত করে। এর পাশাপাশি গান্ধী উল্লেখ করেছেন যে ভারতের ন্যায় একটি শ্রমিক উদ্বৃত্ত অর্থনীতিতে ভারী যন্ত্রের ব্যাপক ব্যবহার শ্রমিকদের কর্মচ্যুত করে কর্মহীনতা বা বেকারত্বের কারণ হয়ে দাঁড়াবে। এক্ষেত্রে মনে রাখা প্রয়োজন গান্ধী কখনোই সামগ্রিকভাবে শিল্পায়ন বা যন্ত্রের বিরোধিতা করেন নি। তিনি কেবলমাত্র এদুটি দ্বারা সৃষ্ট সম্পদের কেন্দ্রীকরন এবং ব্যক্তির মর্যাদা হ্রাসের বিষয়টির বিরোধিতা করেছেন। সর্বোপরি, তিনি শিল্পভিত্তিক পুঁজিবাদী সমাজের প্রতিযোগিতামূলক অর্থনৈতিক ব্যবস্থার পরিবর্তে একটি সাম্যভিত্তিক অর্থনৈতিক ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠার উপর গুরুত্ব আরোপ করেছেন।
পাশ্চাত্য পুঁজিবাদী ব্যবস্থা ও গান্ধী
     গান্ধীর অর্থনৈতিক চিন্তাধারার অপর একটি দিক ছিল পাশ্চাত্য পুঁজিবাদী সমাজ সম্পর্কে তাঁর নেতিবাচক মনোভাব। তাঁর মতে, এটি কখনোই উৎপাদন ও বণ্টনের শ্রেষ্ঠ পদ্ধতি হতে পারে না কারণ এটি শোষণ ও হিংসার ভিত্তিতে গড়ে ওঠা একটি ব্যবস্থা। এই ব্যবস্থার মূল ভিত্তি হল অসাম্য এবং সম্পদের একত্রীকরণ যা নিঃসন্দেহে অর্থনৈতিক চৌর্য বৃত্তির সমরূপ। কারন উৎপাদন ব্যবস্থা ও এর উৎপাদনসমূহ চরিত্রগতভাবে সামাজিক হলেও পুঁজিবাদী ব্যবস্থায় এদের ওপর মুষ্টিমেয় ব্যক্তির অধিকার প্রতিষ্ঠিত হয়। একইভাবে সামন্ততান্ত্রিক ব্যবস্থাকে গান্ধী চৌর্যবৃত্তি বলে অভিহিত করেছেন কারণ এখানেও জমির ওপর ভূস্বামীগণ অন্যায়ভাবে নিয়ন্ত্রণ কায়েম করে। মূলতঃ এই কারণে গান্ধী পাশ্চাত্য অর্থনৈতিক ব্যবস্থাকে অস্বীকার করে ভারতীয় সমাজে একটি বিকল্প অর্থনৈতিক ব্যবস্থা গঠনের ওপর গুরুত্ব আরোপ করেছেন।
     গান্ধীজীর মতে, ভারতীয় সমাজের এই বিকল্প অর্থনীতির ভিত্তি হবে নৈতিকতা ও ন্যায় বিচার। বস্তুগত সুবিধার পরিবর্তে সকলের জনকল্যাণের জন্য প্রতিষ্ঠা হবে আধ্যাত্মিক উন্নয়ন ও শ্রমের মর্যাদা। এরূপ সমাজের চিত্র অঙ্কন করতে গিয়ে গান্ধী এক বিকেন্দ্রীকৃত গ্রামীণ অর্থনীতি গড়ে তোলার কথা বলেছেন যা একইসাথে ব্যক্তি ও গ্রামীণ সমাজে আত্মনির্ভরশীলতা ও আত্মবিশ্বাসের ভিত্তি রচনা করবে। এই আত্মনির্ভরশীলতার ধারণাটি গান্ধী তলস্তয়ের “Bread Labour”-এর ধারণার অনুকরণে গড়ে তুলেছেন যার মূল লক্ষ্য সমাজের প্রতিটি ব্যক্তি যাতে ন্যূনতম চাহিদা পূরণ করতে পারে তা সুনিশ্চিত করা। এছাড়াও রাস্কিনের প্রয়োজনমূখী উৎপাদন ব্যবস্থার প্রচলন ও চাহিদা হ্রাসের ধারণা দুটির প্রভাব গান্ধীর অর্থনৈতিক ধারণায় প্রতিফলিত হয়েছে।
গান্ধীর অছি ব্যবস্থার ধারণা
     আদর্শ সমাজ ব্যবস্থা গড়ে তোলার লক্ষ্যে গান্ধী যে পরিবর্তনের ওপর গুরুত্ব আরোপ করেছেন তার জন্য তিনি কখনোই শ্রেণী সংগ্রামের প্রয়োজনীয়তাকে স্বীকার করেন নি। কারন তিনি মনে করতেন হিংসা ও অন্যের মত প্রকাশের স্বাধীনতা হরণের মধ্যে দিয়ে গড়ে ওঠে বলে শ্রেণী সংগ্রাম কখনোই ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠা করতে পারে না। তিনি আরও মনে করতেন শ্রেণী সংগ্রাম হল সংখ্যাগরিষ্ঠের শাসনের নামান্তর মাত্র এবং এই কারণে এটি সর্বদাই পরিহার করা উচিৎ। এই চিন্তাধারার বশবর্তী হয়ে গান্ধী বলেন মালিক ও শ্রমিক শ্রেণীর সম্পর্ক, সামন্ত প্রভু ও কৃষকের সম্পর্ক ইত্যাদি কখনোই সংঘাতপূর্ণ নয়, বরং তারা পরস্পর নির্ভরশীল। যেহেতু এই সমাজ ন্যায় বিচারের ধারণা দ্বারা নির্ধারিত হয় নি সেহেতু এক্ষেত্রে যা প্রয়োজন তা হল বল প্রয়োগ না করে তাদের মধ্যে এক ন্যায়ভিত্তিক সম্পর্ক প্রতিষ্ঠা করা। এই পারস্পরিক সম্পর্ক প্রতিষ্ঠিত করার লক্ষ্যে গান্ধী তাঁর ‘অছি ব্যবস্থার’ তত্বটি নির্মাণ করেছেন। গান্ধীর মতে এটি হল প্রতিষ্ঠিত আর্থ-সামাজিক ব্যবস্থার পরিবর্তনের অহিংস পদ্ধতি। অছি ব্যবস্থার ধারণা অনুসারে মুনাফা যেহেতু একটি সামাজিক বিষয় সেহেতু এর উপর ব্যক্তি মালিকানা প্রতিষ্ঠা ন্যায়সঙ্গত নয়। শিল্প মালিক বা সামন্ত প্রভুর অবশ্যই মনে রাখতে হবে তারা হল সামাজিক সম্পদের অছি মাত্র এবং এই কারণে সামাজিক সম্পদ থেকে প্রাপ্ত মুনাফা তারে সমাজের সকল সদস্যের সাথে ভাগ করে নেবে। তিনি মনে করেন এই অছিদের কখনোই সেই সম্পদ নেওয়া উচিৎ নয় যেখানে তাদের শ্রম মিশ্রিত হয় না। অর্থাৎ, গান্ধীর অছি ব্যবস্থার ধারণার কেন্দ্রীয় বিষয় হল পুঁজিপতিদের স্বেচ্ছা প্রণোদিত আত্মশুদ্ধি দ্বারা তাদের সম্পূর্ণ মানসিক পরিবর্তন। গান্ধীর অছি ব্যবস্থা সংক্রান্ত ধারণাটির নিম্নলিখিত ভিত্তিগত ধারণা লক্ষ্য করা যায়:
     (১) কোন ব্যক্তিই নিজস্ব দুর্বলতা ছাড়া স্বাধীনতা হারায় না। তিনি বলেন শ্রমিক, কৃষক, উভয়েই তাদের প্রচ্ছন্ন সম্মতির কারণে শোষিত হয়। শ্রমিক বা কৃষক শ্রেণী যদি সহযোগিতা করতে অসম্মত হয় তবে নিশ্চিতভাবে উৎপাদন ব্যবস্থা ভেঙ্গে পড়বে এবং এই পরিস্থিতিতে পুঁজিবাদী বা সামন্ত শ্রেণি শোষিতদের দাবী মেনে নিতে বাধ্য হবে। সুতরাং, গান্ধীর মতে নিজেদের শক্তি সম্পর্কে চেতনা বৃদ্ধিই একমাত্র শ্রমিকদের উন্নতি বিধান করতে পারে।
     (২) গান্ধীর অছি ব্যবস্থার দ্বিতীয় ভিত্তি অনুসারে যেহেতু শ্রম হল প্রকৃত পুঁজি সেহেতু শ্রমিক শ্রেণীই হল পুঁজির প্রকৃত মালিক।
     (৩) অছি ব্যবস্থার তৃতীয় ভিত্তিটি হল অর্থবান শ্রেণীকে অবশ্যই উপলব্ধি করতে হবে যে বাস্তবে তাদের সকল সম্পদের মালিক হল সমাজ। সুতরাং, তাদের অবশ্যই সমাজের সকল সদস্যের সাথে এই সম্পদ বণ্টন করে নিতে হবে, অন্যথায় জনগণ তাদের সাথে অসহযোগিতা করবে।
     সুতরাং, বলা যায় গান্ধীর অছি ব্যবস্থার ধারণার প্রধান প্রতিপাদ্য বিষয় হল শান্তিপূর্ণ ও অহিংস পদ্ধতির সাহায্যে সামাজিক সম্পদের পুনর্বণ্টন। গান্ধীর এই অছি সংক্রান্ত ধারণাটি চূড়ান্ত নৈতিকতার ভিত্তিতে প্রতিষ্ঠিত হলেও এর বিরুদ্ধে নিম্নলিখিত সমালোচনা পরিলক্ষিত হয়।
     মানবেন্দ্রনাথ রায় গান্ধীর অছি ব্যবস্থার সমালোচনা করে এটিকে কাল্পনিক ধারণা বলে অভিহিত করেছেন। তিনি বলেন এটি কার্যত পেটি-বুর্জোয়া মানসিকতার প্রতিনিধিত্ব করে। হীরেন মূখার্জী বলেন গান্ধীর এই ধারণাটি একান্তভাবে অবাস্তব ধারণা যা শুধুমাত্র স্বর্গীয় পরিস্থিতিতে অর্জন করা সম্ভব হয় কারণ কোন ব্যক্তিই স্বতঃস্ফূর্তভাবে নিজ সম্পদের ওপর থেকে অধিকার ত্যাগ করবে না। অবশ্য গান্ধীর অছি ব্যবস্থার বিরুদ্ধে সর্বাপেক্ষা তীব্র সমালোচনা করেছেন ই.এম.এস. নাম্বুদরিপাদ। তার মতে, গান্ধীর অছি সংক্রান্ত ধারণাটি বুর্জোয়া কর্তৃত্বের প্রতিষ্ঠা ও সংরক্ষণ করে পুঁজিবাদকে এক নতুন জীবন প্রদান করেছেন। তবে এই সমালোচনার প্রত্যুত্তরে বলা যায় গান্ধী কখনোই আশা করেন নি যে প্রতিষ্ঠিত সমাজ ব্যবস্থায় তাঁর অছি সংক্রান্ত ধারণা গড়ে তোলা সম্ভব। বরং এই ব্যবস্থাকে প্রতিষ্ঠিত করার জন্য তিনি সত্যাগ্রহী সমাজ গঠনের প্রয়োজনীয়তার উল্লেখ করেছেন। তিনি বলেন সত্যাগ্রহী সমাজে যখন প্রতিটি ব্যক্তি তার চিত্ত শুদ্ধিকরণের মাধ্যমে হয়ে উঠবে এক একজন সত্যাগ্রহী একমাত্র তখনই অছি ব্যবস্থা সার্থক রূপ লাভ করবে। সুতরাং, গান্ধীর অছি ব্যবস্থা গঠনের অন্যতম প্রধান পূর্বশর্ত হল সত্যাগ্রহী সমাজের প্রতিষ্ঠা।
x----------------x

কোরিয় যুদ্ধ, 6th Sem, Hist Hons, DSE-3

কোরীয় যুদ্ধ (২৫ জুন ১৯৫০ – ২৭ জুলাই ১৯৫৩)


Korean War Montage 2.png
তারিখ২৫ জুন ১৯৫০ – ২৭ জুলাই ১৯৫৩
(৩ বছর, ১ মাস, ২ দিন)
অবস্থানকোরীয় উপদ্বীপজাপান সাগরকোরীয় প্রণালী
অবস্থা
অধিকৃত
এলাকার
পরিবর্তন
কোরীয় অসামরিক এলাকা প্রতিষ্ঠিত হয়; উত্তর কোরিয়া কেসং শহর দখল করে, দুই দেশই কিছুটা সীমান্ত পায়।
যুধ্যমান পক্ষ
সাম্যবাদী বাহিনী:
সেনাধিপতি
শক্তি
মোটঃ ৯,৭২,২১৪
মোটঃ ১৬,৪২,৬০০
Note: The figures vary by source; peak unit strength varied during war.
হতাহত ও ক্ষয়ক্ষতি
মোটঃ১,৭৮,৪২৬ জন মৃত এবং ৩২,৯২৫ জন নিখোঁজ
মোট আহতঃ ৫,৬৬,৪৩৪
মোট মৃতঃ ৩,৬৭,২৮৩-৭,৫০,২৮২
মোট আহতঃ ৬,৮৬,৫০০-৭,৮৯,০০০
  • মোট বেসামরিক মানুষ হতাহত হয়ঃ ২৫ লাখ [১১]
  • দক্ষিণ কোরিয়া: ৯,৯০,৯৬৮
    ৩,৭৩,৫৯৯ মৃত[১১]
    ২,২৯,৬২৫ আহত[১১]
    ৩,৮৭,৮৪৪ অপহরণ / নিখোঁজ[১১]
  • উত্তর কোরিয়া: ১৫,৫০,০০ (অনুমিত)[১১]

কোরীয় যুদ্ধ (২৫ জুন ১৯৫০ – ২৭ জুলাই ১৯৫৩)[২৯][ক][৩১]জাতিসংঘ সমর্থিত কোরিয়া প্রজান্ত্র এবং সোভিয়েত ইউনিয়নগণপ্রজাতন্ত্রী চীন সমর্থিত গণতান্ত্রিক গণপ্রজাতন্ত্রী কোরিয়া মধ্যকার ১৯৫০-এর দশকের প্রথম দিকে শুরু হওয়া তিন বছরের অধিক সময় ব্যাপী সংঘটিত হওয়া একটি আঞ্চলিক সামরিক যুদ্ধ। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের শেষ দিকে সংঘটিত হওয়া প্রশান্ত মহাসাগরীয় যুদ্ধ নিয়ে বিজয়ী মিত্রশক্তির মধ্যকার একটি চুক্তিকে কেন্দ্র করে কোরীয়দের মধ্যে রাজনৈতিক বিভাজন এই যুদ্ধের প্রাথমিক কারণ ধরা হয়। ১৯১০ সাল থেকে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ শেষ হওয়ার আগ পর্যন্ত জাপানী সাম্রাজ্য কোরীয় উপদ্বীপ শাসন করে। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে জাপানী সাম্রাজ্যের আত্মসমর্পণের পর মার্কিন প্রশাসন উপদ্বীপটিকে ৩৮তম সমান্তরাল রেখায় ভাগ করে, এর মধ্যে মার্কিন সামরিক বাহিনী দক্ষিণ অর্ধেক নিজেদের দখলে আনে এবং সোভিয়েত সশস্ত্র বাহিনী উত্তর অর্ধেক অধিকারে আনে।[৩২]
কোরীয় উপদ্বীপের উত্তরে প্রতিষ্ঠিত হয় সাম্যবাদী সরকার আর অন্যদিকে দক্ষিণে মার্কিনিদের সহয়তায় প্রতিষ্ঠিত ডানপন্থী সরকার। ৩৮তম সমান্তরাল রেখা ক্রমেই দুই কোরীয় রাষ্ট্রের মধ্যে রাজনৈতিক ভাগ সৃষ্টি করে। যদিও যুদ্ধ শুরু হওয়ার মাস পূর্ব পর্যন্ত আলোচনার জন্য যোগাযোগ চলতে থাকে, ধীরে ধীরে দু পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা বাড়তে থাকে। সীমানাপাড়ে বিচ্ছিন্ন লড়াই সংঘটিত হয়। পরিস্থিতি রণাঙ্গনে রূপান্তরিত হয় যখন ১৯৫০ সালের ২৫ জুন উত্তর কোরিয়া দক্ষিণ কোরিয়া আক্রমণ করে।[৩৩] সোভিয়েত ইউনিয়ন ১৯৫০ সালে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদ বর্জন করে। সোভিয়েত ইউনিয়নের ভেটো না পাওয়ায় নিরাপত্তা পরিষদে যুক্তরাষ্ট্র ও অন্যান্য নিরাপত্তা সিদ্ধান্ত নেয়ার অধিকারী রাষ্ট্র কোরিয়ায় একটি সামরিক হস্তক্ষেপ অনুমোদন পাস করে।
দক্ষিণ কোরিয়ার পক্ষে আন্তর্জাতিক তিন লাখ একচল্লিশ সৈন্যের ৮৮ শতাংশই মার্কিনিরা প্রদান করে এবং জাতিসংঘের অন্য বিশ সদস্য রাষ্ট্র সহায়তা প্রদান করে। প্রথম দুই মাস গুরুতর হতাহত সহ্য করার পর প্রতিরক্ষাকর্মীদের পুসান প্যারামিটারে অবস্থান নিতে বাধ্য করা হয়। এর-ই মধ্যে উত্তর কোরিয়ার পক্ষে লড়াই করার জন্য গণপ্রজাতন্ত্রী চীন যুদ্ধে প্রবেশ।[৩৩] চীনা মধ্যস্ততায় দক্ষিণী স্বজাতীয় বাহিনী ৩৮তম সমান্তরাল রেখার পিছনে পশ্চাদপসরণ করে। যতক্ষণ পর্যন্ত সোভিয়েত ইউনিয়ন সরসরি যুদ্ধে না নিলেও তারা উত্তর কোরীয় ও চীনা উভয় বাহিনীকে সরঞ্জামিক সহয়তা প্রদান করে। এই যুদ্ধ সমাপ্ত হয় যখন ২৭ জুলাই ১৯৫৩-এ কোরীয় যুদ্ধবিরতি চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। এর ফলে কোরীয় অসামরিক অঞ্চল প্রতিষ্ঠা হয় যা দুই কোরীয় রাষ্ট্রের মাঝখানে অবস্থিত একটি আড়াই মাইল (৪ কি.মি.) চওড়া সুরক্ষিত বাফার জোন। এখনো ছোটখাটো সংঘর্ষ চলছে।
এই যুদ্ধ শুরু হয় স্থানীয় সময় ২৫ জুন ১৯৫০ ভোর সাড়ে চারটায় এবং যুদ্ধবিরতি স্বাক্ষরের মাধ্যমে শেষ হয় ২৭ জুলাই ১৯৫৩-এ। অনুমান করা হয় ২৫ লাখের উপরে বেসামরিক মানুষ এই যুদ্ধের ফলে হতাহত হয়েছে। বর্তমানে এখনও মার্কিনিরা দক্ষিণ কোরীয়দের বিভিন্নভাবে সামরিক সহয়তা করে আসছে। অনেকের বিশ্লেষণে এই যুদ্ধ স্নায়ুযুদ্ধের অংশ হিসেবে গণ্য। Read More>>>>>>>>>>

Korean War
The Korean war began on June 25, 1950, when some 75,000 soldiers from the North Korean People’s Army poured across the 38th parallel, the boundary between the Soviet-backed Democratic People’s Republic of Korea to the north and the pro-Western Republic of Korea to the south. This invasion was the first military action of the Cold War. By July, American troops had entered the war on South Korea’s behalf. As far as American officials were concerned, it was a war against the forces of international communism itself. After some early back-and-forth across the 38th parallel, the fighting stalled and casualties mounted with nothing to show for them. Meanwhile, American officials worked anxiously to fashion some sort of armistice with the North Koreans. The alternative, they feared, would be a wider war with Russia and China–or even, as some warned, World War III. Finally, in July 1953, the Korean War came to an end. In all, some 5 million soldiers and civilians lost their lives in what many in the U.S. refer to as “The Forgotten War” for the lack of attention it received compared to more well-known conflicts like World War I and II and the Vietnam War. The Korean peninsula is still divided today.
“If the best minds in the world had set out to find us the worst possible location in the world to fight this damnable war,” U.S. Secretary of State Dean Acheson (1893-1971) once said, “the unanimous choice would have been Korea.” The peninsula had landed in America’s lap almost by accident. Since the beginning of the 20th century, Korea had been a part of the Japanese empire, and after World War II it fell to the Americans and the Soviets to decide what should be done with their enemy’s imperial possessions. In August 1945, two young aides at the State Department divided the Korean peninsula in half along the 38th parallel. The Russians occupied the area north of the line and the United States occupied the area to its south.
By the end of the decade, two new states had formed on the peninsula. In the south, the anti-communist dictator Syngman Rhee (1875-1965) enjoyed the reluctant support of the American government; in the north, the communist dictator Kim Il Sung (1912-1994) enjoyed the slightly more enthusiastic support of the Soviets. Neither dictator was content to remain on his side of the 38th parallel, however, and border skirmishes were common. Nearly 10,000 North and South Korean soldiers were killed in battle before the war even began.

The Korean War and the Cold War

Even so, the North Korean invasion came as an alarming surprise to American officials. As far as they were concerned, this was not simply a border dispute between two unstable dictatorships on the other side of the globe. Instead, many feared it was the first step in a communist campaign to take over the world. For this reason, nonintervention was not considered an option by many top decision makers. (In fact, in April 1950, a National Security Council report known as NSC-68 had recommended that the United States use military force to “contain” communist expansionism anywhere it seemed to be occurring, “regardless of the intrinsic strategic or economic value of the lands in question.”)
“If we let Korea down,” President Harry Truman (1884-1972) said, “the Soviet[s] will keep right on going and swallow up one [place] after another.” The fight on the Korean peninsula was a symbol of the global struggle between east and west, good and evil, in the Cold War. As the North Korean army pushed into Seoul, the South Korean capital, the United States readied its troops for a war against communism itself.
At first, the war was a defensive one to get the communists out of South Korea, and it went badly for the Allies. The North Korean army was well-disciplined, well-trained and well-equipped; Rhee’s forces in the South Korean army, by contrast, were frightened, confused and seemed inclined to flee the battlefield at any provocation. Also, it was one of the hottest and driest summers on record, and desperately thirsty American soldiers were often forced to drink water from rice paddies that had been fertilized with human waste. As a result, dangerous intestinal diseases and other illnesses were a constant threat.
By the end of the summer, President Truman and General Douglas MacArthur (1880-1964), the commander in charge of the Asian theater, had decided on a new set of war aims. Now, for the Allies, the Korean War was an offensive one: It was a war to “liberate” the North from the communists.
Initially, this new strategy was a success. The Inch’on Landing, an amphibious assault at Inch’on, pushed the North Koreans out of Seoul and back to their side of the 38th parallel. But as American troops crossed the boundary and headed north toward the Yalu River, the border between North Korea and Communist China, the Chinese started to worry about protecting themselves from what they called “armed aggression against Chinese territory.” Chinese leader Mao Zedong (1893-1976) sent troops to North Korea and warned the United States to keep away from the Yalu boundary unless it wanted full-scale war.
“No Substitute for Victory”                                                                                                 This was something that President Truman and his advisers decidedly did not want: They were sure that such a war would lead to Soviet aggression in Europe, the deployment of atomic weapons and millions of senseless deaths. To General MacArthur, however, anything short of this wider war represented “appeasement,” an unacceptable knuckling under to the communists. As President Truman looked for a way to prevent war with the Chinese, MacArthur did all he could to provoke it. Finally, in March 1951, he sent a letter to Joseph Martin, a House Republican leader who shared MacArthur’s support for declaring all-out war on China–and who could be counted upon to leak the letter to the press. “There is,” MacArthur wrote, “no substitute for victory” against international communism. For Truman, this letter was the last straw. On April 11, the president fired the general for insubordination.

The Korean War Reaches a Stalemate

In July 1951, President Truman and his new military commanders started peace talks at Panmunjom. Still, the fighting continued along the 38th parallel as negotiations stalled. Both sides were willing to accept a ceasefire that maintained the 38th parallel boundary, but they could not agree on whether prisoners of war should be forcibly “repatriated.” (The Chinese and the North Koreans said yes; the United States said no.) Finally, after more than two years of negotiations, the adversaries signed an armistice on July 27, 1953. The agreement allowed the POWs to stay where they liked; drew a new boundary near the 38th parallel that gave South Korea an extra 1,500 square miles of territory; and created a 2-mile-wide “demilitarized zone” that still exists today.

Korean War Casualties 

The Korean War was relatively short but exceptionally bloody. Nearly 5 million people died. More than half of these–about 10 percent of Korea’s prewar population–were civilians. (This rate of civilian casualties was higher than World War II’s and the Vietnam War’s.) Almost 40,000 Americans died in action in Korea, and more than 100,000 were wounded. Today, they are remembered at the Korean War Veterans Memorial near the Lincoln Memorial on the National Mall in Washington, D.C., a series of 19 steel statues of servicemen.

Article Title

Korean War
Author History.com Editors Website Name HISTORY

URL, https://www.history.com/topics/korea/korean-war

Access Date, April 28, 2020, Publisher, A&E Television Networks

Last Updated, January 31, 2020

Original Published Date

November 9, 2009