Thursday, April 23, 2020

Political Science Honours--- 6th Sem-- C-13/ Western Political Thought-II

Liberalism of Locke



Qus. Modern liberalism begins with Locke’ – explain the statement.
Or, Discuss the liberal political theory of John Locke. Do you think that he is the founder of modern liberalism?
                রাষ্ট্রচিন্তার ইতিহাসের এক অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ মতাদর্শ রূপে উদারনীতিবাদ বিভিন্ন দার্শনিক কর্তৃক বিভিন্ন-ভাবে ব্যাখ্যা প্রাপ্ত হয়েছে। এই কারণে উদারনীতিবাদ কাকে বলে সে বিষয়ে মত পার্থক্য দেখা যায়। তবে সাধারণভাবে বলা যায় উদারনীতিবাদের মূল ভিত্তি হল ব্যক্তি স্বাধীনতা। ইতিবাচক দিক থেকে উদারনীতিবাদ বলতে বোঝায় যে কোন ধরণের কর্তৃত্ববাদ বা স্বৈরতান্ত্রিক কর্তৃত্বের অস্বীকার। প্রচলিত কাঠামো ও ব্যবস্থার মধ্যে সীমাবদ্ধভাবে সংস্কার সাধনই হল উদারনীতিবাদের মৌলিক উদ্দেশ্য। তিনটি দিক থেকে উদারনীতিবাদের তাৎপর্য বিশ্লেষণ করা যেতে পারে, যথা:
     (১) সামাজিক ক্ষেত্রে উদারনীতিবাদ ধর্মনিরপেক্ষতার নীতির উপর প্রতিষ্ঠিত।
     (২) অর্থনৈতিক দিক থেকে এটি পণ্য উৎপাদন, বিনিময় এবং বণ্টনের স্বাধীনতাকে বোঝায়।
     (৩) রাজনৈতিক ক্ষেত্রে এটি গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার কথা বলে।
উদারনীতিবাদের প্রতিষ্ঠাতা রূপে লক
     একটি রাজনৈতিক মতবাদ রূপে উদারনীতিবাদের প্রথম সুসংহত বিকাশ ঘটে লকের রাষ্ট্র দর্শনের মধ্য দিয়ে। লকের পূর্বে কয়েকজন চিন্তাবিদ স্বাধীনতা, সীমাবদ্ধ সরকার ইত্যাদির কথা বললেও লকই সর্বপ্রথম এই উদারনৈতিক ধ্যান-ধারণাগুলিকে সুসংহতভাবে প্রতিষ্ঠিত করেন। যুক্তিবাদ, সহিষ্ণুতা, সাংবিধানিক সরকার – এগুলি ছিল লকের উদারনীতিবাদের মূল বিষয়। লকের উদারনৈতিক ধারণাটি নিম্নলিখিত দিক থেকে আলোচনা করা যেতে পারে।
(১) সম্মতি তত্ব
লকের উদারনীতিবাদের একটি গুরুত্বপূর্ণ ভিত্তি হল তার সম্মতি তত্ব। তিনি বলেন প্রকৃতির রাজত্বে অনিশ্চিত জীবন থেকে মুক্তি লাভের আশায় মানুষ যে রাষ্ট্র ক্ষমতা গঠন করেছিল তার ভিত্তি ছিল সকলের সম্মতি। লকই সর্বপ্রথম বলেন, গণসম্মতির ভিত্তিতে যেহেতু রাষ্ট্র ব্যবস্থা গড়ে ওঠে, সেহেতু সার্বভৌমকে জনগণের কাছে দায়িত্বশীল থাকতে হয়। এই কারণে, সার্বভৌম যদি তার দায়িত্ব পালনে ব্যর্থ হয় তবে তার বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করার পূর্ণ অধিকার মানুষের রয়েছে। এককথায়, লকের মূল বক্তব্য ছিল রাষ্ট্রের আনুগত্য দাবী এবং জনগণের সম্মতি – এই দুটি হল রাষ্ট্রের অস্তিত্বের প্রধান ভিত্তি।
লকের সম্মতি তত্বের অপর একটি দিক হল তিনি আইনসভাকে তাৎক্ষণিক সার্বভৌম বলে চিহ্নিত করলেও স্থায়ীভাবে এটিকে চূড়ান্ত ক্ষমতার অধিকারী বলে স্বীকার করেন নি। তিনি বলেন, আইনসভা জনস্বার্থ রক্ষায় ব্যর্থ হলে তাকে সংযতভাবে প্রতিরোধ করা জনগণের অধিকার। এই অধিকার প্রয়োগ করে জনগণ প্রতিষ্ঠিত আইনসভা ভেঙ্গে দিয়ে নতুন আইনসভা গঠন করতে পারে। এইভাবে গণ-সম্মতির ওপর রাষ্ট্রের অস্তিত্ব নির্ভরশীলতার প্রচার করে লক আধুনিক উদারনীতিবাদের ভিত্তি স্থাপন করেছেন।
(২) ব্যক্তি স্বাধীনতার নীতি
উদারনীতিবাদের অপর একটি ধারণাগত ভিত্তি ব্যক্তি স্বাধীনতার বিষয়টি ব্যাখ্যায় লক প্রাকৃতিক অধিকার তত্বের ওপর নির্ভর করে বলেন প্রকৃতির রাজত্বে মানুষ এই স্বাধীনতা ভোগ করত এবং রাষ্ট্র সমাজের অন্তর্ভুক্ত হয়েও তারা এই স্বাধীনতা ভোগ করে। তার মতে রাষ্ট্র সমাজ গঠনের প্রধান উদ্দেশ্যই ছিল ব্যক্তির জীবন, স্বাধীনতা, সম্পত্তির অধিকার রক্ষা করা। এই তিনটি যেহেতু প্রাকৃতিক অধিকার সেহেতু এই অধিকারগুলি সংরক্ষণ করা রাষ্ট্রের দায়িত্ব এবং এই দায়িত্বই রাষ্ট্র ক্ষমতার ওপর নিয়ন্ত্রণ বলে লক মনে করেন।
লক আরোও মনে করেন, ব্যক্তি হল রাষ্ট্র শক্তির উৎস। সুতরাং, ব্যক্তির স্বাধীনতা রক্ষাই রাষ্ট্রের মূল লক্ষ্য হওয়া উচিৎ। তবে একই সাথে বলা প্রয়োজন লক ব্যক্তি স্বাধীনতার উপর গুরুত্ব দিলেও ব্যক্তির অবাধ স্বাধীনতাকে তিনি স্বীকার করেন নি। তাঁর মতে, অবাধ স্বাধীনতা স্বৈরতন্ত্রের নামান্তর মাত্র এবং স্বাধীনতা যাতে স্বৈরচরীতায় পরিণত হতে না পারে তার জন্য লক আইনের দ্বারা ব্যক্তি স্বাধীনতা নিয়ন্ত্রণের কথা বলেছেন। এইভাবে রাষ্ট্র কর্তৃত্ব এবং ব্যক্তির স্বাধীনতার সমন্বয় সাধন করে উদারনীতিবাদের গতিধারা নির্ধারণে লক কার্যকরী ভূমিকা গ্রহণ করেছেন।
(৩) সীমাবদ্ধ শাসনব্যবস্থা
সীমাবদ্ধ শাসনব্যবস্থা আধুনিক উদারনীতিবাদের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। সীমাবদ্ধ শাসনব্যবস্থার ধারণাটিও লকের দর্শনে গুরুত্ব লাভ করেছে। লক মনে করতেন, রাষ্ট্র ও সরকার অভিন্ন নয়। সরকারের গঠন ও পরিবর্তন রাষ্ট্রীয় ক্ষেত্রকে প্রভাবিত করে না। তিনি বলেন, সরকারের ক্ষমতা সীমাবদ্ধ এবং জনকল্যাণের দায়িত্ব পালনের মধ্যে দিয়ে সরকারের ক্ষমতা প্রতিনিয়ত নিয়ন্ত্রিত হয়। এইভাবে লক সরকারের ক্ষমতা সীমিত করে তাকে জনগণের সম্মতির ওপর প্রতিষ্ঠিত করেন।
(৪) ক্ষমতা স্বতন্ত্রীকরণ নীতি
সীমাবদ্ধ শাসনব্যবস্থার অন্যতম ভিত্তি ক্ষমতা স্বতন্ত্রীকরণ নীতিটিও লকের দর্শনে প্রতিষ্ঠা লাভ করেছে। লক উপলব্ধি করেছিলেন সমকালীন বুর্জোয়া সমাজের স্বার্থ সুরক্ষিত করার জন্য সরকারকে স্বৈরাচারীতা থেকে মুক্ত রাখা প্রয়োজন। লকের মতে, স্বাধীনতার জন্য আইন প্রণয়ন ও শাসন ক্ষমতা একটি বিভাগের হাতে থাকা উচিৎ নয়। কোন একটি বিভাগ যদি অতিরিক্ত ক্ষমতার অধিকারী হয়ে ওঠে তবে তা ব্যক্তি স্বাধীনতার পরিপন্থী হয়ে দাঁড়াবে। এই দৃষ্টিকোণ থেকে বিচার করে লক সীমাবদ্ধ শাসনব্যবস্থার প্রতিষ্ঠাকারী রূপে ক্ষমতা স্বতন্ত্রীকরণ নীতিটি গড়ে তুলেছিলেন।
(৫) বিপ্লবের অধিকার
প্রকৃতিগতভাবে উদারনীতিবাদী দর্শন যে কোন ধরণের সর্বাত্মক ক্ষমতার বিরোধী। রাষ্ট্র ব্যবস্থার যাবতীয় কর্তৃত্ববাদী ধারণার বিরোধিতা করে লক বলেন সরকার হল জনগণের ইচ্ছার অছি মাত্র। সুতরাং, প্রতিষ্ঠিত সরকার জনগণের ইচ্ছা রক্ষায় ব্যর্থ হলে জনগণ বিপ্লবের মাধ্যমে ক্ষমতার পরিবর্তনের অধিকারী। সুতরাং, এই বিপ্লবের তত্ব দ্বারা লক জনগণের হাতেই চূড়ান্ত সার্বভৌম ক্ষমতা অর্পণ করেছেন।
(৬) সম্পত্তির তত্ব
লকের উদারনৈতিক দৃষ্টিভঙ্গি সর্বাপেক্ষা সুস্পষ্ট রূপ লাভ করেছে তাঁর সম্পত্তির তত্বের মধ্যে দিয়ে। তাঁর মতে, সম্পত্তির অধিকার তত্বের মধ্যেই মানুষের জীবন ও স্বাধীনতার অধিকার নিহিত রয়েছে। তিনি বলেন প্রত্যেক ব্যক্তি সমভাবে সম্পদ ভোগের অধিকারী। প্রধানতঃ ব্যক্তিগত সম্পত্তি রক্ষার তাগিদেই প্রকৃতির রাজ্য ত্যাগ করে মানুষ রাষ্ট্র, সমাজ গঠন করেছে। সুতরাং, ব্যক্তির সম্পত্তি রক্ষাই রাষ্ট্রের প্রধান দায়িত্ব। এই কারণে তিনি বলেন, ব্যক্তি যদি ন্যায়সঙ্গতভাবে সীমাহীন সম্পত্তি অর্জন করে তা অবৈধ নয় এবং রাষ্ট্র তার সম্পত্তির কোন অংশ কেঁড়ে নিতে পারে না। তবে একই সাথে তিনি বলেন, একজন ব্যক্তির ততটুকু সম্পদই অর্জন করা উচিৎ যতটুকু সে ভোগ করতে পারে, কারণ ঈশ্বর কোন সম্পদ অপচয়ের জন্য সৃষ্টি করেন নি।
(৭) ধর্মসহিষ্ণুতা
লক তাঁর রাষ্ট্রদর্শনের মধ্যে দিয়ে যে ধর্মসহিষ্ণুতার নীতিটি গড়ে তুলেছেন তা আধুনিক উদারনৈতিক গণতান্ত্রিক ব্যবস্থাতেও ধর্মীয় সমস্যা সমাধানের মূল সূত্র বলে বিবেচিত হয়।
সুতরাং, উপরের আলোচনা থেকে দেখা যায় হবসের চিন্তাধারায় সর্বপ্রথম ব্যক্তি স্বাতন্ত্রবাদ প্রতিষ্ঠিত হলেও লকের দর্শনেই এটি সর্বপ্রথম সুস্পষ্ট রূপ লাভ করেছে। হবস ব্যক্তি স্বাতন্ত্রবাদী রূপে শুরু করলেও শেষ পর্যন্ত লেভায়াথানের আবির্ভাবের মধ্য দিয়ে এটি বিলীন হয়ে যায়। কিন্তু লক যেভাবে রাষ্ট্রীয় আনুগত্য, ব্যক্তি স্বাধীনতা, প্রাকৃতিক অধিকারের ধারণা নির্মাণ করেছেন অথবা সম্পত্তির তত্ব দ্বারা রাষ্ট্র ক্ষমতাকে সঙ্কুচিত করার কথা বলেছেন তাতে নিঃসন্দেহে বলা যায় “Modern liberalism begins with Locke”।
x---------------x