Thursday, April 23, 2020

Political Science Honours--- 6th Sem-- C-13 (Western Political Thought--II)


Machiavelli on The Prince and The Discourses


Qus. What are the contents of ‘The Prince’ and ‘The Discourses’? Make difference between the two.
                নবজাগরণের প্রভাবে সমগ্র ইউরোপে যে যুক্তিবাদী চিন্তাধারার প্রসার ঘটেছিল তাঁর পথিকৃৎ ছিলেন ইতালীয় চিন্তাবিদ ম্যাকিয়াভেলী। প্রকৃতপক্ষে ম্যাকিয়াভেলীর রচনার মধ্যে দিয়ে জাতি রাষ্ট্র সম্পর্কে আধুনিক রাজনৈতিক তত্বের সূচনা ঘটেছিল। ম্যাকিয়াভেলী যে সময়ে তাঁর আলোচনা ধারা গড়ে তুলেছিলেন সেই সময় সমগ্র ইতালি কতকগুলি ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র অংশে বিভক্ত ছিল। স্বাভাবিকভাবেই ইতালিয় ঐক্য সাধনের লক্ষ্যকে সামনে রেখেই তিনি এক বাস্তববাদী রাজনৈতিক তত্ব গড়ে তুলেছিলেন। যে দুটি গ্রন্থের মধ্যে দিয়ে ম্যাকিয়াভেলীর সামগ্রিক চিন্তাদর্শনের প্রতিফলন ঘটেছিল সেই দুটি গ্রন্থ হল ‘The Prince’ এবং ‘The Discourses’। এই দুটি গ্রন্থে ম্যাকিয়াভেলীর সামগ্রিক রাষ্ট্রদর্শনের দুটি ভিন্ন ধারা পরিলক্ষিত হয়। নিম্নে এই দুটি গ্রন্থের মূল বিষয় বস্তু আলোচনা করা গেল।
‘The Prince’-এর বিষয়বস্তু
     ম্যাকিয়াভেলীর রাষ্ট্রদর্শনের নির্মাণে ‘The Prince’-এর ভূমিকা যে সর্বাপেক্ষা গুরুত্বপূর্ণ সে বিষয়ে কোন সন্দেহ নেই। এই গ্রন্থটিকে কখনোই প্লেটোর ‘Republic’ বা অ্যারিস্টটলের ‘Politics’ গ্রন্থের সমরূপ বলে মনে করা উচিৎ নয়। বরং এখানে নৈতিকতার পরিবর্তে রাজনীতির কূটনীতির ব্যাখ্যাই অধিক প্রাধান্য লাভ করেছে।  একদিকে যেমন তৎকালীন ইতালির রাজনৈতিক সমস্যাবলী আলোচিত হয়েছে, তেমনি সেই সকল সমস্যা সমাধানের পদ্ধতি নির্ধারণের বিষয়টিও প্রাধান্য পেয়েছে। এই গ্রন্থে ২৫টি অধ্যায় রয়েছে এবং বিভিন্ন অধ্যায়ে বিভিন্ন রাজনৈতিক সমস্যাবলী আলোচিত হয়েছে। ‘The Prince’-এর প্রথম ১১টি অধ্যায়ে ম্যাকিয়াভেলী স্বৈরতান্ত্রিক শাসনের বিভিন্ন রূপ এবং এদের প্রতিষ্ঠার বিষয়টি আলোচনা করেছেন। এই গ্রন্থের শুরুতেই তিনি দাবী করেছেন সকল সম্ভাব্য শাসনব্যবস্থাই হয় প্রজাতান্ত্রিক অথবা রাজতান্ত্রিক ব্যবস্থা। এর সাথে সাথেই তিনি উল্লেখ করেছেন বিভিন্ন শাসনব্যবস্থার পরিচালনাগত পদ্ধতি এবং তার প্রধান লক্ষ্য। তিনি বলেন, বংশানুক্রমিক শাসনব্যবস্থায় শাসনগত জটিলতা কম থাকলেও মিশ্র শাসনব্যবস্থায় এই জটিলতা বৃদ্ধি পেতে থাকে। যে রাজ্যে শাসক ও শাসিতের ভাষাগত বিভেদ থাকে সেখানে এই জটিলতা সর্বোচ্চ আকার ধারণ করে। এইরূপ শাসনব্যবস্থার জটিলতা দূরীকরণের লক্ষ্যে ম্যাকিয়াভেলী এই গ্রন্থে পরামর্শ দিয়েছেন একজন রাজাকে অবশ্যই অধিকৃত অঞ্চলের নিয়ন্ত্রণ স্থাপনের লক্ষ্যে সেখানে স্থায়ীভাবে বসবাস করতে হবে। তিনি আরও বলেন, এই অধিকৃত অঞ্চল যদি একজন রাজার অধীন হয় তবে তার নতুন শাসকের পক্ষে দখল ও নিয়ন্ত্রণ করা যত সহজ হয় প্রজাতন্ত্র দখলের ক্ষেত্রে ততখানি সহজ হয় না। সুতরাং, একজন রাজার উচিৎ অপর রাষ্ট্র দখল ও নিয়ন্ত্রণের জন্য এক শক্তিশালী সামরিক ব্যবস্থার নির্মাণ করা।
     ‘The Prince’ গ্রন্থের ১২-১৪ নম্বর অধ্যায়ে ম্যাকিয়াভেলী সামরিক ক্ষমতা সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করেছেন। তাঁর মতে যে কোন সরকারের মূখ্য ভিত্তি হল সামরিক ব্যবস্থা এবং সুনির্দিষ্ট আইন। এক্ষেত্রে, ম্যাকিয়াভেলী একজন শাসককে দুটি বিষয় অবশ্যই অনুসরণ করতে পরামর্শ দিয়েছেন, যথা: (১) একজন শাসককে অবশ্যই শক্তিশালী যোদ্ধা হতে হবে; এবং (২) তাকে অবশ্যই সামরিক শক্তি বৃদ্ধি করতে হবে যাতে করে তিনি নাগরিকদের ওপর সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ স্থাপনে সক্ষম হন।
     ‘The Prince’-এর ১৫-১৭ নম্বর অধ্যায়ে ম্যাকিয়াভেলী শাসকের উদ্দেশ্যে কতকগুলি পরামর্শ প্রদান করেছেন, যেগুলিকে তিনি শাসকের গুণাবলী রূপে চিহ্নিত করেছেন। শাসকের উদ্দেশ্যে ম্যাকিয়াভেলীর এই পরামর্শগুলি হল:
     (১) একজন শাসক অবশ্যই অতিমাত্রায় দয়ালু হবেন না, বরং তিনি হবেন নিষ্ঠুর, অন্যথায় তার দয়ালু মনোভাব তার বিনাশের কারণ হয়ে দাঁড়াবে।
     (২) ম্যাকিয়াভেলীর মতে “Men are ungrateful, fickle and deceitful, eager to avoid dangers’। এই কারণে তিনি মনে করেন ব্যক্তি প্রকৃতিগত কারণে নৈতিকতাহীন হয় এবং সমাজে নীতিবোধ প্রতিষ্ঠাকরণের জন্যই শাসকের নিষ্ঠুর হওয়া প্রয়োজন।
     (৩) একজন শাসক সমাজের সার্বিক কল্যাণ বিধানে কখনোই জনগণের প্রশংসার প্রত্যাশী হবেন নাল তিনি সহনশীলতার ও নিষ্ঠুরতার সমন্বয়ে শাসন পরিচালনা করবেন।
     ‘The Prince’ গ্রন্থের বাকী অধ্যায়গুলিতে ম্যাকিয়াভেলী রাজনৈতিক আনুগত্য, শাসক ও শাসিতের জন্য পৃথক নীতিবোধ, শাসকের ক্ষমতা অব্যাহত রাখার পদ্ধতি ইত্যাদি সকল বিষয় সম্পর্কে আলোচনা করেছেন। সংক্ষেপে বলা যেতে পারে শাসকের শাসন পদ্ধতি অপেক্ষা শাসনের লক্ষ্য নিয়ে আলোচনা করাই হল ম্যাকিয়াভেলীর ‘The Prince’ গ্রন্থের মূল উপজীব্য বিষয়।
‘The Discourses’-এর বিষয়বস্তু
     ম্যাকিয়াভেলী তাঁর দ্বিতীয় উল্লেখযোগ্য গ্রন্থ ‘The Discourses’-এ সম্পূর্ণ ভিন্ন পদ্ধতিতে প্রজাতান্ত্রিক সরকারের ধারণাটি বিশ্লেষণ করেছেন। এই গ্রন্থের ১৪টি অধ্যায়ে ম্যাকিয়াভেলী প্রজাতান্ত্রিক সরকার গঠনের বিভিন্ন সামাজিক এবং রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট এবং এরূপ সরকারের পতনের কারণসমূহ নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেছেন। ম্যাকিয়াভেলীর মতে একটি প্রজাতান্ত্রিক ব্যবস্থা হল সেই সরকার যেখানে রাজতন্ত্র স্বীকৃতি লাভ করে না। একটি প্রজাতন্ত্র আবার দুটি উপভাগে বিভক্ত যার একটি হল অভিজাততান্ত্রিক প্রজাতন্ত্র এবং অপরটি হল জনপ্রিয় প্রজাতন্ত্র। তিনি বলেন, যে কোন প্রজাতন্ত্রের প্রধান ভিত্তি হল প্রত্যক্ষভাবে বা নির্বাচনের মাধ্যমে রাষ্ট্রনীতি নির্ধারণে নাগরিকদের অংশগ্রহণ।
     ‘The Discourses’ গ্রন্থে প্রজাতন্ত্রের উদ্ভবের বিষয়টি ব্যাখ্যা করতে গিয়ে ম্যাকিয়াভেলী বলেন একজন চূড়ান্ত কর্তৃত্বসম্পন্ন শাসকই প্রজাতন্ত্র গঠন করতে পারেন. তবে এই চূড়ান্ত কর্তৃত্বসম্পন্ন শাসককে অবশ্যই জনদরদী হতে হবে কারণ নাগরিকদের যে অংশ স্বাধীনতা রক্ষায় আগ্রহী থাকে অথবা নিজেদের আত্মনিয়ন্ত্রণের দাবীকে প্রাধান্য দেয়, তারা কখনোই একনায়কতন্ত্রকে দীর্ঘকাল মেনে নেবে না। সুতরাং, ম্যাকিয়াভেলী বলেন ক্ষমতা অর্জনের পরই শাসককে জনকল্যাণমূখী ব্যবস্থা গড়ে তুলতে তৎপর হতে হবে। সমগ্র জনগণকে অবশ্যই রাজনৈতিক কর্তৃত্বের অংশ রূপে স্বীকৃতি দিতে হবে যাতে করে সঙ্কটকালীন সময়ে শাসক তাদের কাছ থেকে সামরিক সাহায্য লাভ করতে পারেন। একই সাথে তিনি সতর্ক করে দিয়ে বলেন প্রতিটি প্রজাতন্ত্রেই শ্রেণীবিভাজন বর্তমান থাকে কিন্তু শাসককে লক্ষ্য রাখতে হবে যাতে করে এই শ্রেণী বৈষম্যের মধ্যে সমন্বয় সাধন করে এক জনপ্রিয় গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা নির্মাণ করা সম্ভব হয়। ম্যাকিয়াভেলী আরও বলেন একটি প্রজাতন্ত্রে সামগ্রিক নির্বাচন ব্যবস্থা কার্যত দায়িত্বশীল নেতৃত্বের জন্ম দেয়। সুতরাং, বলা যেতে পারে ম্যাকিয়াভেলী তাঁর ‘The Discourses’ গ্রন্থে ব্যক্তিগত স্বার্থের সাথে জনগণের স্বার্থের সমন্বয়কে একটি আদর্শ প্রজাতন্ত্রের মূখ্য ভিত্তি বলে চিহ্নিত করেছেন।
‘The Prince’ এবং ‘The Discourses’-এর মধ্যে পার্থক্য
     ইতালীয় চিন্তাবিদ ম্যাকিয়াভেলীর এই দুটি গ্রন্থের মধ্যে তুলনামূলক অলোচনার ভিত্তিতে নিম্নলিখিত পার্থক্যগুলি লক্ষ্য করা যায়।
     প্রথমতঃ, ‘The Prince’ গ্রন্থে ম্যাকিয়াভেলী প্রধানত সমকালীন সমস্যাবলী এবং তা দূরীকরণের পদ্ধতিসমূহ নিয়ে আলোচনা করেছেন। কিন্তু ‘The Discourses’ গ্রন্থে তিনি শাসনব্যবস্থার উদ্দেশ্য সম্পর্কে আলোচনা করেছেন।
     দ্বিতীয়তঃ, ‘The Prince’ গ্রন্থে তিনি সর্বাত্মক শাসন কর্তৃত্ব, ক্ষমতা দখল এবং সেই ক্ষমতা বজায় রাখার পদ্ধতিসমূহ অলোচনা করেছেন। কিন্তু তিনি ‘The Discourses’ গ্রন্থে কিভাবে সম্ভাব্য প্রজাতন্ত্র গঠন ও রক্ষা করা যায় সেই বিষয়ে আলোচনা করেছেন।
     তৃতীয়তঃ, ‘The Prince’ গ্রন্থে ম্যাকিয়াভেলী শাসককেই এককভাবে রাজনৈতিক কর্তৃত্ব প্রদান করেছেন। কিন্তু ‘The Discourses’ গ্রন্থে তিনি নাগরিকদের কর্তৃত্বের অংশীদারি করে তুলতে চেয়েছেন।
     সর্বোপরি, ‘The Prince’-এ ম্যাকিয়াভেলী শাসক কর্তৃপক্ষের কথা বললেও ‘The Discourses’ গ্রন্থে তিনি বহু শাসন কর্তৃপক্ষের উল্লেখ করেছেন।
x-------------x