Friday, April 24, 2020

Political Science Honours-- 2nd Sem / C-3 (Political Theory: Issues and Concepts)

Gandhian Theory of State


Qus. Briefly examine M.K. Gandhi’s view on the nature of modern state. Was Gandhi an anarchist? Justify your answer.
                বিংশ শতাব্দীর ভারতীয় চিন্তাবিদদের মধ্যে সম্ভবত সর্বাপেক্ষা গুরুত্বপূর্ণ ও বিতর্কিত ব্যক্তিত্ব হলেন মোহনদাস করমচাঁদ গান্ধী। এর পেছেন প্রধান কারন ছিল গান্ধীজি কখনোই রাষ্ট্রতাত্ত্বিক ছিলেন না। বরং তিনি ছিলেন রাষ্ট্র দার্শনিক যিনি নৈতিকতার ভিত্তিতে রাষ্ট্রনৈতিক বিষয়সূচীর পর্যালোচনার পক্ষপাতী ছিলেন। স্বাভাবিকভাবেই গান্ধির রাষ্ট্রদর্শন কোন সুসংহত রাজনৈতিক তত্বের জন্ম দিতে পারে নি। প্রকৃতপক্ষে তিনি বাস্তবে যেভাবে রাষ্ট্রনৈতিক বিষয়সূচীকে পর্যবেক্ষণ করেছেন তার আলোকেই সংশ্লিষ্ট বিষয়ে তিনি নিজের ধারণা নির্মাণ করেছেন।
রাষ্ট্র সম্পর্কে গান্ধীজি
     একটি সুনির্দিষ্ট বিষয় রূপে রাষ্ট্র সম্পর্কে গান্ধীর দৃষ্টিভঙ্গি এর ব্যতিক্রম নয়। নিজের বিভিন্ন রচনায় তিনি কখনোই রাষ্ট্র নাম প্রতিষ্ঠানের গরিমা বৃদ্ধি বা একে বৈধতা প্রদানের প্রয়াস করেন নি। একই সাথে তিনি কখনোই মার্কসবাদীদের ন্যায় রাষ্ট্রের সম্পূর্ণ অবলুপ্তির কথা বলেন নি। তিনি প্রকৃত অর্থে ব্রিটিশ উপনিবেশিক শাসনের অধীনে ভারতে রাষ্ট্রের যে রূপ প্রত্যক্ষ করেছেন তার নিরিখে রাষ্ট্র নাম প্রতিষ্ঠানের পরিবর্তে এক ন্যায়পরায়ণ রাজনৈতিক প্রতিষ্ঠান নির্মাণের কথা বলেছেন।
     গান্ধী দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করতেন রাষ্ট্রের উচিৎ জনকল্যানকামী কার্য সম্পাদন করা কারণ রাষ্ট্র হল মানব জাতির উন্নয়ন ও প্রগতিশীলতার মাধ্যম। এমনকি প্রাথমিকভাবে তিনি মনে করতেন ব্রিটিশ সরকার ভারতীয় জনগণের মঙ্গল সাধনে যথেষ্ট আগ্রহী। কিন্তু দক্ষিণ আফ্রিকা ও ভারতে নিজের প্রত্যক্ষ অভিজ্ঞতার নিরিখে রাষ্ট্র সম্পর্কে তাঁর নিজের ধারণার পরিবর্তন ঘটে। এই সময় থেকে তাঁর দৃষ্টিতে রাষ্ট্র মঙ্গলকারী প্রতিষ্ঠান থেকে শোষণমূলক প্রতিষ্ঠান বলে পরিগণিত হতে শুরু করে। এই সময় থেকে তিনি রাষ্ট্রের প্রকৃতি ব্যাখ্যা করতে গিয়ে বলেন: “The state represents an unjust, immoral and violent system”। এই বিশ্বাস দ্বারা পরিচালিত হয়েই গান্ধী এক নৈতিক ও যথার্থ সমাজ ব্যবস্থা দ্বারা রাষ্ট্র ব্যবস্থার পরিবর্তনের কথা বলেন।
     রাষ্ট্র ব্যবস্থার ধ্বংস সাধনের পক্ষে গান্ধীর মত প্রকাশের পেছনে প্রধান কারণ ছিল তিনি মনে করতেন রাষ্ট্র সরাসরি বল প্রয়োগের সাথে যুক্ত। রাষ্ট্র হল অশুভ প্রতিষ্ঠান যা একইসাথে শারীরিক ও আর্থ-সামাজিক হিংসাবোধের জন্ম দেব। প্রকৃতপক্ষে গান্ধীজি মনে করতেন ‘রাষ্ট্র সর্বদাই সুসংহতভাবে হিংসার প্রতিনিধিত্ব করে, রাষ্ট্র আইন প্রণয়ন করে তা বলপূর্বক জনগণের উপর চাপিয়ে দেয়’। স্বাভাবিকভাবেই রাষ্ট্রীয় আইন অনৈতিক হলেও জনগণ তা মেনে নিতে বাধ্য হয়। গান্ধীর মতে এই বিষয়টি নিশ্চিতভাবে রাষ্ট্রের হিংসামূলক ও অনৈতিক চরিত্রটিকে প্রতিষ্ঠিত করে। তিনি আরোও বলেন রাষ্ট্রের আইন প্রয়োগ পদ্ধতিটি যেহেতু বলপ্রয়োগের উপর নির্ভরশীল সেহেতু এটি কখনোই ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠা করতে পারে না। কারণ, ন্যায় বিচার ও হিংসা সর্বদাই পরস্পর সংঘাতপূর্ণ সম্পর্ক। এই দৃষ্টিকোণ থেকে বিচার করে গান্ধী বলেন, একজন ব্যক্তি বিবেক সম্পন্ন হওয়ার কারণে তার সংশোধন সম্ভব নয়।
     গান্ধী অপর একটি কারণেও রাষ্ট্র ব্যবস্থার সমালোচনা করেছেন। গান্ধীর দৃষ্টিতে রাষ্ট্র সর্বদাই গণতন্ত্রের বিরোধী এবং এটি ব্যক্তির ব্যক্তিত্বকে ধ্বংস করে। এই প্রসঙ্গে গান্ধী বলেন রাষ্ট্র সর্বদাই ক্ষমতার কেন্দ্রীকরণ ও চূড়ান্ত সার্বভৌমিকতার ধারণায় বিশ্বাস করে এবং এই কেন্দ্রীকরণ একটি অগণতান্ত্রিক ধারণা। একইসাথে তিনি বলেন, একটি গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় জনগণ সার্বভৌম ক্ষমতার অদিক থেকেও বলা যায় রাষ্ট্র হল একটি গণতন্ত্রবিরোধী ধারণা। সর্বোপরি গান্ধী মনে করতেন রাষ্ট্র সর্বদাই নিজের ইচ্ছা জনগণের ওপর চাপিয়ে দেয় যা কার্যত ব্যক্তির সৃজনশীলতাকে ধ্বংস করে।
     তবে এক্ষেত্রে বলা প্রয়োজন গান্ধি রাষ্ট্র ব্যবস্থার তীব্র সমালোচনা করলেও তিনি কখনোই ব্যক্তিকে নির্দেশ প্রদানের প্রতিষ্ঠানের অস্তিত্বকে অস্বীকার করেন নি। এই কারণেই তাঁর আদর্শ সমাজ ব্যবস্থার কল্পনায় গান্ধী রাষ্ট্রহীন গণতন্ত্রের ধারণাটিকে তুলে ধরেছেন। এই প্রসঙ্গে তাঁর মত হল “That government is best, which governs the least”। সুতরাং, গান্ধীর দৃষ্টিতে আদর্শ সমাজ ব্যবস্থায় কোন সরকার বা রাষ্ট্র থাকবে না এবং রাষ্ট্রীয় আইনের পরিবর্তে সেখানে বিরাজ করবে বিবেকের অনুশাসন। এই সমাজ ব্যবস্থায় জনগণ হবে আত্মনিয়ন্ত্রিত এবং এটি হবে আত্ম-নির্ভরশীল ও বিকেন্দ্রীকৃত ব্যবস্থা যেখানে জনগণ তাদের বিবেক দ্বারা পরিচালিত হবে। অর্থাৎ, গান্ধী সেই সমাজ ব্যবস্থার কল্পনা করেছেন যেখানে ব্যক্তিবর্গ বল প্রয়োগের দ্বারা নয়, স্বেচ্ছামূলক সহযোগিতার ভিত্তিতে পরস্পরের সাথে দৃঢ় বন্ধনে আবদ্ধ থাকবে যাকে গান্ধী ‘Enlighten Anarchy’ বলে অভিহিত করেছেন।
গান্ধী কি নৈরাজ্যবাদী ছিলেন?
     রাষ্ট্র সম্পর্কিত গান্ধীর মতবাদটি পর্যালোচনা করে কেউ কেউ গান্ধীকে নৈরাজ্যবাদী চিন্তাবিদ বলে অভিহিত করেছেন। কারন নৈরাজ্যবাদীদের ন্যায় তিনিও রাষ্ট্রের সম্পূর্ণ ধ্বংস সাধনের কথা বলেছিলেন। কিন্তু বাস্তবিক পক্ষে গান্ধীকে কখনোই প্রুধো, বাকুনিন বা ক্রপোৎকিনের ন্যায় চরম নৈরাজ্যবাদী দার্শনিক বলা যায় না, বরং তাঁর চিন্তাধারার সাথে গড্‌উইন, তলস্তয়ের ন্যায় মানবতাবাদী নৈরাজ্যবাদী তাত্ত্বিকদের অধিক সাদৃশ্য পরিলক্ষিত হয়। এ প্রসঙ্গে ডঃ বিনয় সরকার বলেন, ‘গান্ধীর চিন্তাধারায় নৈরাজ্যবাদ ও অহিংসার ধারণার সমন্বয় লক্ষ্য করা যায়’। একই ভাবে ডঃ গোপীনাথ ধাওয়ান বলেন, ‘গান্ধী প্রকৃত অর্থে নৈতিক নৈরাজ্যবাদী চিন্তাধারা গড়ে তুলেছিলেন’।
     গান্ধীকে নৈতিক বা মানবতাবাদী নৈরাজ্যবাদী দার্শনিক বলার পেছনে প্রধান কারণ হল তিনি চরম নৈরাজ্যবাদীদের ন্যায় যে কোন ধরণের কর্তৃত্বের বিরোধিতা করেন নি, তিনি কেবল রাষ্ট্রের বিরোধিতা করেছিলেন কারণ এটি যেহেতু একটি বল প্রয়োগকারী প্রতিষ্ঠান। তিনি রাষ্ট্রের বিরোধিতা করেছিলেন ঠিকই, কিন্তু একইসাথে একটি অহিংস স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের মাধ্যমে বিবেকের শাসন প্রতিষ্ঠিত করার কথা বলেন যা চরম নৈরাজ্যবাদীদের ধারণায় লক্ষ্য করা যায় না। সর্বোপরি, তিনি কখনোই চরম নৈরাজ্যবাদীদের ন্যায় সশস্ত্র বিপ্লবের মাধ্যমে রাষ্ট্রের ধ্বংস সাধনকে সমর্থন করেন নি।
     সুতরাং, উপরের আলোচনা থেকে বলা যায় আপাত দৃষ্টিতে গান্ধীকে নৈরাজ্যবাদী দার্শনিক বলে মনে হলেও তিনি কখনোই নৈরাজ্যবাদী ছিলেন না। তিনি রাষ্ট্রকে ধ্বংস করার কথা বললেও একইসাথে অন্য একটি কর্তৃপক্ষের হাতে শাসন ক্ষমতা অর্পণ করতে চেয়েছেন কারণ তিনি বিশ্বাস করতেন “There are many things which individual cannot do alone, but here he requires an authority”। গান্ধীর এই ধারণা থেকে নিঃসন্দেহে প্রমাণিত হয় তিনি রাষ্ট্র নামক প্রতিষ্ঠানের নৈতিক সংশোধনের ওপর গুরুত্ব আরোপ করেছেন, যা চরম নৈরাজ্যবাদীদের ধারণায় পরিলক্ষিত হয় না। সুতরাং, এদিক থেকে তলস্তয় বা গড্‌উইনের ন্যায় গান্ধীকেও দার্শনিক বা মানবতাবাদী নৈরাজ্যবাদী তাত্ত্বিক বলে অভিহিত করাই অধিক যুক্তিযুক্ত।
x----------------x